অন্যান্য কলকাতা 

মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করে বাংলায় বিজেপি অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে !

শেয়ার করুন

সেখ ইবাদুল ইসলাম :  ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি যে তৃতীয় বারের জন্য সরকার গড়ার দিকে কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছে তা সাম্প্রতিক পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলেই স্পষ্ট হয়েছে । তবে এক্ষেত্রে থেমে নেই কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট । কারণ কংগ্রেস যদি সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল করতো তাহলে ইন্ডিয়া জোটের শরীকরা অনেকটাই চাপে থাকতো । এরফলে শরীকদের খুব বেশি কথা চলতো না । কিন্ত তিন রাজ্যে কংগ্রেসের পরাজয় শরীকদের অনেকটাই আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে । তারা মনে করছে মিলিজুলি সরকার হলে সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির গুরুত্ব বেশি থাকবে । আর দেশের সরকারে উপর নিয়ন্ত্রণ থাকলে সব রকম কাজ করা সহজ হবে ।

যাইহোক জোটের আসন রফা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে । কংগ্রেস সম্ভবত ২৫০ থেকে ৩০০ আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করবে । বাকী ২৫০ আসনে শরীকরা লড়াই করবে । এদিকে, জানা গেছে পশ্চিমবাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন রফা চূড়ান্ত হয়ে গেছে । চারটি আসন কংগ্রেস এই মুহুর্তে দাবি করেছে । এই চারটি হলো বহরমপুর , মালদা দক্ষিণ, মালদা উত্তর এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ । সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে পশ্চিমবাংলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যেতে পারে । যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব তিনটি আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে । তবে সেক্ষেত্রে কংগ্রেস কী করবে এখনও স্পষ্ট নয় ।

Advertisement

অন্যদিকে , মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ করার যে সিদ্ধান্ত লোকসভার স্পিকার নিয়েছেন তাতে এই রাজ্যে বিজেপি অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে যেতে পারে । কারণ বাংলার মেয়ের প্রতি এই অবিচার ইতিমধ্যে তৃণমূলকে খানিকটা মাইলেজ দিয়েছে । শুধু মাইলেজ নয়, জাতীয় স্তরেও বিরোধী জোটকে আরও সংহত করতে পেরেছে কংগ্রেস মহুয়াকে সামনে রেখে । কারণ আমরা দেখলাম মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি সবটাই কাল্পনিক , প্রমাণিত নয় । এথিক্স কমিটি রিপোর্টে বলেছে, অর্থ লেনদেন হয়েছে তা প্রমাণ করতে কোনো এজেন্সী দিয়ে তদন্ত করতে হবে । তাহলে প্রশ্ন যেটা তদন্ত সাপেক্ষ সেটা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কেন নিল এথিক্স কমিটি । আর আমরা দেখলাম মহুয়া মৈত্রকে যেদিন সংসদ থেকে বহিস্কার করা হল সেদিন সংসদের বাইরে মহুয়ার সাংবাদিক বৈঠকের সময় সোনিয়া গান্ধী সহ দেশের তাবড় তাবড় রাজনীতিবিদরা মহুয়ার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল । তিন রাজ্যে হেরে যাওয়ার পরেও কংগ্রেস যেভাবে মহুয়া ইস্যুতে বিরোধীদের এক জোট করতে সক্ষম হলো তাতে আগামীতেএই জোট যে আরও জোরোলো হবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই ।

আর বাংলায় বিজেপি এমনিতেই অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে । একমাত্র শুভেন্দু ছাড়া আর কোনো নেতা তেমন ভাবে লড়াই করছেন না । মহুয়া ইস্যুতে বাংলার মেয়েরা যদি মনে করেন এটা তাদের অপমান তাহলে পরিস্থিতি বিজেপির অনুকূলে থাকবে না । একজন মাটির রাজনীতিবিদ হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অধীর চৌধুরি বিষয়টি দ্রুত উপলদ্ধি করতে পেরেছেন । তাই মহুয়ার বহিস্কারের কথা ঘোষণার পরেই মমতা জানিয়ে দিলেন মহুয়া ফের কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী । অন্যদিকে অধীর বললেন, এটা বাংলার মেয়ের অপমান । যেটা বিজেপি বুঝে উঠতেই পারেনি, সেটা মমতা শুধু বুঝলেন তা নয় , তাঁকে প্রার্থী ঘোষনা করে দিয়ে বাংলার মেয়েদের সমস্ত ভোট নিজের অনুকূলে নিয়ে এলেন মমতা । আর অধীর চৌধুরি বিবৃতি দিয়ে বাংলার মানুষকে বোঝালেন বিজেপি আসলে বাংলা বিরোধী । আর এই সেন্টিমেন্ট যদি লোকসভা নির্বাচনে একবার ক্লিক করে যায় তাহলে বিজেপির হেভিওয়েট বাংলার নেতারাও জিততে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ